স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস শাখা কর্তৃক গত মার্চ মাসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। প্রতি মাসেই এ তালিকা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত ৩১ মে মার্চ মাসের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে হাসপাতালে অপারেশনের সংখ্যা, আল্ট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে, ইসিজি, বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা এবং মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবার ওপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। এসব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হচ্ছে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর প্রমাণ মেলে প্রতিবেদনে।
গত জানুয়ারিতে এ উপজেলার স্থান ছিল সারাদেশে ৩৩তম, ফেব্রুয়ারিতে ২৬তম এবং মার্চে ২১তম। প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালটিতে বর্তমানে প্রসবসেবা (নরমাল ও সিজারিয়ান), আল্ট্রা, এক্সরে, বিভিন্ন রক্তের পরীক্ষা চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। যেখানে আগে বহির্বিভাগে ৪০০-৫০০রোগী হতো সেখানে বর্তমানে ৭০০-৮০০ হচ্ছে। জরুরি বিভাগেও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। গড়ে প্রতি শতাধিক মানুষ জরুর বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। প্যাথলজি ল্যাব, আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষসহ অন্যান্য কক্ষে উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কাঙ্খিত সেবা পেয়ে অনেককে হাসিমুখে হাসপাতাল ছাড়তেও দেখা গেছে।
হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, এই হাসপাতালে প্রায় ২০ বছর ধরে চাকরি করছি। আগের তুলনায় গত দুই বছর ধরে সবদিক থেকে সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে প্যাথলজি ল্যাবে রক্তজনিত সব পরীক্ষা নিরীক্ষা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই এসব সেবা পাচ্ছেন রোগীরা।
জরুরি বিভাগে থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, সার্বক্ষণিক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকে। গড়ে প্রতিদিন ১০০ এর অধিক রোগী জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের চেয়ে হাসপাতালে সেবার মান ভালো। ওষুধ পাওয়ার পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত মূল্যে হাসপাতাল থেকে এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, রক্ত পরীক্ষা এবং সিজারিয়ান অপারেশন করা হচ্ছে। এতে হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। কাঙ্খিত সেবা গ্রহণে প্রতিদিনই হাসপাতালে ভিড় করছেন তারা।
আছিয়া খাতুন নামে একজন বলেন, গত ১৫ দিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছি। আজ ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে বলেছেন। হাসপাতাল থেকেই মাত্র ২০০ টাকায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করিয়েছি। বাইরে করালে টাকা বেশি লাগতো।
আয়েশা বেগম নামে আরেক নারী জানান, হাসপাতালের সেবার মান আগের চেয়ে অনেক ভালো। গরিব মানুষ বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছেন। পাশাপাশি অসহায় হতদরিদ্র নারীরা হাসপাতাল থেকে সুলভ মূল্যে সিজারিয়ান অপারেশন করাতে পারছেন। সেবার মান ভালো হওয়ায় অনেকেই হাসপাতালে ভিড় করছেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নূর-এ-আলম খান বলেন, এই অর্জনের সঙ্গে জড়িত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব ডাক্তার, নার্স/মিডওয়াইফ, অফিস স্টাফ, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, ওয়ার্ড বয়, আয়া, হেলথ অ্যাসিস্টেন্ট, ফিল্ড স্টাফ, সিএইচসিপি, মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারসহ হাসপাতালের প্রত্ত্যীক স্টাফকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন। এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
https://www.daily-bangladesh.com/country/473580
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস